ক্যাটাটোনিয়া (জ্ঞান থাকলেও নড়াচড়া ও কথা বলতে না পারার অবস্থা)

Catatonia

Below is a Bengali translation of our information resource on catatonia. You can also view our other Bengali translations.

এই তথ্যটি তাদের জন্য যারা বর্তমানে ক্যাটাটোনিয়ায় ভুগছেন বা অতীতে ভুগেছেন। এটি তাদেরও জন্য যারা ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত কাউকে চেনেন বা তাদের পরিচর্যা করছেন।

ক্যাটাটোনিয়া কী?

ক্যাটাটোনিয়া এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি সজাগ থেকেও অন্যান্য মানুষ এবং তাদের চারপাশের পরিবেশের প্রতি নির্বিকার থাকে। ক্যাটাটোনিয়া কোনো ব্যক্তির চলাচল, কথা বলার ক্ষমতা এবং আচরণকে নানাভাবে প্রভাবিত করতে পারে। ক্যাটাটোনিয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তবে, ক্যাটাটোনিয়া হওয়ার সঠিক কারণ আজও পরিষ্কার নয় এবং এই ক্ষেত্রে আরও গবেষণা করা প্রয়োজন।

ক্যাটাটোনিয়ার লক্ষণগুলো কী কী?

ক্যাটাটোনিয়া হঠাৎ করে বা ধীরে ধীরে শুরু হতে পারে। অতীতে ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা দিনের পর দিন অদ্ভুত ভঙ্গিতে বসে থাকতেন বলে জানা যায়। আমরা এখন জানি যে ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা অন্যান্য বেশ কিছু লক্ষণও অনুভব করতে পারেন।

যদি কারO এই লক্ষণগুলোর তিনটি বা তার বেশি থাকে, তবে তাদের ক্যাটাটোনিয়া থাকতে পারে:

  • খুব স্থির হয়ে বসে সামনে তাকিয়ে থাকা।
  • অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে থাকা যা সাধারণত অস্বস্তিকর।
  • অন্য কেউ তাদের হাত বা পা যে অবস্থানে সরিয়ে দেয়, সেই অবস্থানেই ধরে রাখা।
  • দীর্ঘ সময় ধরে বার বার একই ধরনের অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে যাওয়া।
  • অন্য আরেকজনের অঙ্গভঙ্গি নকল করা ('ইকোপ্রাক্সিয়া' নামে পরিচিত)।
  • তারা যে বাক্যাংশ বা শব্দ শোনেন, তার পুনরাবৃত্তি করা (‘ইকোলালিয়া' নামে পরিচিত)।
  • অদ্ভুত মুখভঙ্গি করে রাখা।
  • কথাবার্তা, খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেওয়া।
  • তাদেরকে কিছু বলা হলে বা আদেশ দেওয়া হলে সেগুলো মেনে নেওয়া।
  • কিছু না করা, বা কিছু না করতে চাওয়া ('নেগিটিভিজম' হিসাবে পরিচিত)।
  • হঠাৎ করে খুব উত্তেজিত বা অস্থির হয়ে ওঠা। একে বলা হয় 'এক্সাইটেড ক্যাটাটোনিয়া'।

এই লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে বা চলেও যেতে পারে এবং কম-বেশি তীব্র হয়ে উঠতে পারে। ক্যাটাটোনিয়ার লক্ষণগুলো একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকমের হতে পারে। কিছু মানুষ খুব কম নড়াচড়া করে, আবার অনেকে খুব উত্তেজিত হয়ে উঠতে পারে।

আপনি যদি নিজের বা অন্য কারো মধ্যে এই লক্ষণগুলোর তিনটি বা তার বেশি দেখতে পান তবে সাথে সাথে সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। আপনার জিপি অথবা মেন্টাল হেলথ টিমের কাছ থেকে অথবা এনএইচএস ১১১ নাম্বারে ফোন করলে সহায়তা পাওয়া যাবে।

ক্যাটাটোনিয়ার কারণ কী?

ক্যাটাটোনিয়া অনেক কারণে হতে পারে। এগুলোর মধ্যে আছে:

মানসিক অসুস্থতা যেমন:

শারীরিক অসুস্থতা যেমন:

  • সংক্রমণ
  • মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়া
  • ড্রাগ ও অ্যালকোহল ব্যবহার করা
  • মেটাবলিক ডিজঅর্ডার, যেমন ডায়াবেটিস –  যেখানে  শরীর আপনাকে সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য রাসায়নিক ক্রিয়াগুলো খুব বেশি অথবা খুব কম ব্যবহার করে থাকে।
  • অটোইমিউন ডিজঅর্ডার - এটা হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, যা সাধারণত অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করে, ভুল করে স্বাস্থ্যকর কোষগুলোকে আক্রমণ করে।

কারো যদি ক্যাটাটোনিয়া হয়, তাহলে মেডিকেল টিমের অবশ্যই অনুসন্ধান করা উচিত যে এর কোনো শারীরিক কারণ আছে কি না।

এই অসুস্থতাগুলো ক্যাটাটোনিয়ার কারণ হলেও এগুলো কীভাবে ক্যাটাটোনিয়া ঘটায় তা অস্পষ্ট।

এসব মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা থাকলেই যে ক্যাটাটোনিয়া হবে তা নয়। এছাড়া আমরা নিজেরাও সঠিকভাবে জানি না কেন এমন হয়।

গবেষণা অনুযায়ী মস্তিষ্কের রাসায়নিক উপাদান যেমন গাবা, গ্লুটামেট এবং ডোপামিনের কারণে এমন হতে পারে। এই রাসায়নিক পদার্থগুলো মস্তিষ্কের কার্যপ্রণালীকে প্রভাবিত করে, এবং এই রাসায়নিকগুলোর পরিমাণ বেশি বা কম হওয়া ক্যাটাটোনিয়া বিকাশে ভূমিকা রাখে বলে ধারণা করা হয়।

ক্যাটাটোনিয়া অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে (এএসডি) আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও প্রভাবিত করতে পারে। আপনি এই সম্পর্কে ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটির ওয়েবসাইটে আরও জানতে পারবেন।

ক্যাটাটোনিয়া হওয়া কতটা স্বাভাবিক?

মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগীদের মাঝে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জনের ক্যাটাটোনিয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে, এমন প্রমাণ রয়েছে যে এটি শনাক্ত না-ও হতে পারে।

ক্যাটাটোনিয়ার সাথে যুক্ত দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা বাদে আমরা এটাও জানি না যে কোন ঝুঁকিগুলো কিছু মানুষের ক্যাটাটোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ক্যাটাটোনিয়া বেশি হতে দেখা যায়।

শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে ক্যাটাটোনিয়া কম হয়। যেসব শিশুদের ক্যাটাটোনিয়া আছে, তাদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রে কৈশোর বয়সেই এটি দেখা দেয়। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ক্যাটাটোনিয়া মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের দ্বিগুণভাবে প্রভাবিত করে বলে মনে করা হয়।

ক্যাটাটোনিয়ার জন্য কী কী পরীক্ষা আছে?

কারও ক্যাটাটোনিয়া আছে কি না এবং এর কারণ জানতে ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা করতে পারেন। ক্যাটাটোনিয়ার কারণ কী হতে পারে তা খুঁজে বের করলে ডাক্তারের ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসায় সহায়তা হবে।

যদি আপনার ক্যাটাটোনিয়া আছে বলে মনে হয়, তবে আপনার ডাক্তার নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন :

  • ইতিহাস — আপনার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে ডাক্তার আপনার সাথে বা আপনার পরিচর্যাকারী ব্যক্তির সাথে কথা বলবেন। আপনি এই মুহূর্তে কেমন বোধ করছেন সেটিও তাঁরা জানতে চাইবেন। আপনাকে বা আপনার পরিচর্যাকারী ব্যক্তিকে আপনি যে ওষুধগুলো খাচ্ছেন, আপনার মাথায় লাগা যে-কোনো আঘাত এবং অন্য যে-কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে তাঁদেরকে জানাতে হবে।1
  • পর্যবেক্ষণ অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় বা যখন হাসপাতালের ওয়ার্ডে থাকবেন তখন ডাক্তার আপনার আচরণ পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
  • পরীক্ষা আপনার শরীর সঠিকভাবে কাজ করছে কি না নিশ্চিত করার জন্য ডাক্তার আপনার পরীক্ষা করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার হার্ট, ফুসফুস, পেট ও স্নায়ুতন্ত্রের সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে। 1,4
  • রক্ত পরীক্ষা — ডাক্তার কিছু রক্ত পরীক্ষা করতে পারেন। আপনার কোনো সংক্রমণ বা আপনার শরীর সঠিকভাবে কাজ করছে কি না দেখার জন্য এগুলো করা হবে1,4
  • মস্তিষ্কের স্ক্যান — বিভিন্ন পরীক্ষা করার পরে ও রক্ত পরীক্ষার পরে আরও তথ্যের প্রয়োজন হলে ডাক্তার মস্তিষ্কের স্ক্যান করাতে পারেন। এই স্ক্যানটি ডাক্তারকে আপনার মস্তিষ্ককে আরও বিশদভাবে দেখার সুযোগ দেবে1,4
  • ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (ইইজি) এই পরীক্ষাটি আপনার মস্তিষ্কে বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করে1,4। আপনার কোনো স্নায়বিক ব্যাধি আছে কি না জানতে এটি করা হয়। ইইজির সময় আপনার মাথায় ছোটো ছোটো সেন্সর লাগানো হয় এবং এগুলো দিয়ে আপনার মস্তিষ্ক থেকে উৎপাদিত বৈদ্যুতিক সংকেতগুলো একটি মেশিন দিয়ে দেখা হয়। এনএইচএস ওয়েবসাইটে ইইজি সম্পর্কে আরও জানতে পারবেন।

আমরা কীভাবে ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসা করি?

ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসা করা যায়, এবং এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভালোভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। যদি ক্যাটাটোনিয়া দ্রুত শনাক্ত করা যায়, তাহলে মাঝে মাঝে বাড়িতেই এর চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির আরও নিবিড় চিকিৎসা বা সহায়তার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে তাদেরকে হাসপাতালে যেতে হতে পারে।

অন্তর্নিহিত রোগের চিকিৎসা করা

অনেক সময় ক্যাটাটোনিয়ার অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা করাও ক্যাটাটোনিয়া চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট। উদাহরণস্বরূপ, যদি কারও বাইপোলার ডিজঅর্ডার থাকে, তাহলে তাদের বাইপোলার ডিজঅর্ডারের চিকিৎসাই ক্যাটাটোনিয়া সারিয়ে তুলতে পারে। তবে বেশিরভাগ মানুষের ক্যাটাটোনিয়ার জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন।

লোরাজেপাম

লোরাজেপাম নামক একটি ওষুধ দিয়ে ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসা করা হয়। লোরাজেপাম এক ধরনের বেনজোডায়াজিপাইন, যা এক প্রকারের ঘুমের ওষুধ। অর্থাৎ, এটি শরীর ও মস্তিষ্ককে শান্ত করতে এবং পেশী শিথিল করতে সহায়তা করে। এটি মৃগী রোগের চিকিৎসার জন্যও ব্যবহৃত হয় এবং স্বল্পমেয়াদে এটি উদ্বেগ, অনিদ্রা ও প্যানিক অ্যাটাকের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

মাঝে মাঝে, ডাক্তাররা ভেবে নেন যে কারও ক্যাটাটোনিয়া হয়েছে, তবে তারা পুরোপুরি নিশ্চিত না-ও হতে পারেন। এমন হলে, চিকিৎসা পুরোপুরি শুরু করার আগে ডাক্তার সেই ব্যক্তিকে লোরাজেপামের একটি ডোজ দিতে পারেন। একে বলা হয় 'চ্যালেঞ্জ'।

যদি এক ডোজের পরে ব্যক্তির লক্ষণগুলো কমে যায়, তবে এটি ডাক্তারকে ক্যাটাটোনিয়া শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

আপনার যদি ক্যাটাটোনিয়া হয় তবে দুটি উপায়ের যে-কোনো একটি ব্যবহার করে আপনাকে লোরাজেপাম দেওয়া যাবে :

  • আপনি যদি গিলতে পারেন, তবে ট্যাবলেট হিসাবে লোরাজেপাম নিতে পারেন।
  • আপনি যদি গিলতে না পারেন, তবে পেশী বা শিরাতে ইনজেকশন হিসাবে নিতে পারেন।

শরীর কয়েক ঘন্টার মধ্যে লোরাজেপাম শোষণ করে ফেলে। অতএব, যখন ক্যাটাটোনিয়া নিশ্চিত এবং রোগ নির্ণয় হয়ে যায়, তখন বেশিরভাগ লোককে নিয়মিত সময়সূচী অনুযায়ী দিনে একাধিকবার লোরাজেপাম নিতে হবে। কার্যকরভাবে ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসা করার জন্য বেশি ডোজের ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে।

ইলেক্ট্রোকনভালসিভ থেরাপি (ইসিটি)

যখন ক্যাটাটোনিয়ার লক্ষণ আরও তীব্র হয় বা লোরাজেপাম দিয়ে সুস্থ না হয়, তখন বিকল্প চিকিৎসা বিবেচনা করতে হবে।

যদি কেউ নড়াচড়া করতে, খেতে বা পান করতে না পারেন, তাহলে তারা শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। যদি এমন হয়, তাহলে তাদেরকে ইসিটি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে। এটি এমন একটি চিকিৎসা যেখানে ব্যক্তিকে জেনারেল অ্যানেস্থেটিক দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে তার মস্তিষ্ককে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বৈদ্যুতিক পালস দিয়ে উদ্দীপিত করা হয়। একজন ব্যক্তির রোগের লক্ষণগুলো সারাতে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসিটির একটি কোর্স নির্ধারণ করা হয়।

ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসায় ইসিটি খুবই কার্যকর। আপনি কলেজের ইসিটি বিষয়ক রিসোর্স পড়ে ইসিটি সম্পর্কে আরও জানতে পারবেন।

পুষ্টি পর্যবেক্ষণ

যখন ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত কাউকে চিকিৎসা করা হয়, তখন তাদেরকে সুস্থ রাখার জন্য তাদের পুষ্টি পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। এটি করার জন্য ডাক্তার ও নার্সরা তাদের রক্ত, প্রস্রাব ও সাধারণ শারীরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পারেন।

যদি কেউ ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসা না করে তবে কী হবে?

ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত কেউ যদি চিকিৎসা না পায় তবে তাঁরা খুব অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসা না হলে নিম্নলিখিত সমস্যা হতে পারে :

  • পানিশূন্যতা
  • অপুষ্টি
  • প্রেশার আলসার
  • সংক্রমণ
  • রক্ত জমাট বাঁধা

ক্যাটাটোনিয়া চিকিৎসা না করা হলে এই প্রভাবগুলো অনেক সময় ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা কি ভালো হয়ে যায়?

ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৮ জন এক ডোজ লোরাজেপাম নেওয়ার পর তাদের উপসর্গের উন্নতি দেখা যায়।

কতদিন লোরাজেপাম গ্রহণ চালিয়ে যাওয়া উচিত তার কোনো নিয়ম নেই, কারণ প্রতিটি মানুষই এই ওষুধে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখায়। অনেক সময় একজন ব্যক্তির কেবল এক ডোজ লোরাজেপামের প্রয়োজন হয়। তবে বেশিরভাগ মানুষের ক্যাটাটোনিয়া সম্পূর্ণরূপে ভালো হতে আরও বেশি ডোজের প্রয়োজন হয়।

চিকিৎসা শুরু হয়ে গেলে ক্যাটাটোনিয়া কয়েক ঘন্টা বা দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়, তবে কিছু মানুষের সেরে উঠতে কয়েক সপ্তাহও লাগতে পারে।

ধারণা করা হয় যে মেজাজের সমস্যাজনিত ক্যাটাটোনিয়া সাইকোসিসজনিত ক্যাটাটোনিয়ার চেয়ে সহজে সেরে যায়। তবে উভয় অবস্থার কারণে সৃষ্ট ক্যাটাটোনিয়ার চিকিৎসায় ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

ক্যাটাটোনিয়ার অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা হয়ে গেলে অনেক সময় লোরাজেপাম বন্ধ করা হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে লোরাজেপাম বন্ধ হয়ে গেলে আবার ক্যাটাটোনিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যদি এমন হয়, তাহলে চিকিৎসার একটি দীর্ঘমেয়াদী কোর্স প্রয়োজন হতে পারে।

লোরাজেপাম দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা হয় না এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ করা উচিত। লোরাজেপাম ব্যবহার বন্ধ করার সময় হলে তা ধীরে ধীরে বন্ধ করা উচিত এবং লোরাজেপাম কখনই হঠাৎ বন্ধ করা উচিত নয়।

এমনকি ক্যাটাটোনিয়ার লক্ষণ সেরে গেলেও অন্তর্নিহিত কারণটি সারাতে তাঁদের অন্যান্য চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি তাঁদের কোনো শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতা থাকে, তবে সেগুলো সারাতে তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত কাউকে আমি কীভাবে সহায়তা করতে পারি?

যদি আপনার বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা আপনার পরিচর্যায় থাকা এমন কারও ক্যাটাটোনিয়া হয়েছে বলে মনে হয়, তবে তাঁদের ডাক্তার বা নার্সের সাথে কথা বলুন অথবা এনএইচএস 111 নম্বরে যোগাযোগ করুন।

  • তথ্য প্রদান — ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তির দরকারি তথ্য দিতে অসুবিধা হতে পারে। ফলস্বরূপ, আপনাকে তাদের চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হতে পারে। এটি ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির সঠিক রোগ নির্ণয় করতে এবং তাঁকে চিকিৎসা দিতে সহায়তা করবে।
  • যা ঘটছে তা ব্যাখ্যা করা — ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত কিছু মানুষ জানেন যে তাঁরা ক্যাটাটনিক অবস্থায় রয়েছেন এবং এটি তাঁদের জন্য বিভ্রান্তিকর ও ভীতিজনক। কী ঘটছে তা ব্যাখ্যা করে আপনি তাঁদেরকে সহায়তা করতে পারেন।
  • যা ঘটেছিল তা ব্যাখ্যা করা — ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত কিছু মানুষ ক্যাটাটনিক অবস্থায় থাকাকালীন তাঁরা কেমন অনুভব করেছিলেন তা মনে করতে পারেন না। আপনার পরিচিত ব্যক্তিটি যখন আর ক্যাটাটনিক অবস্থায় না থাকেন, তখন কী ঘটেছিল জানালে সেটি তাদের জন্য উপকারী ও স্বস্তিকর হয়।
  • দেখা করা — আপনি যখন ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত কারও সাথে দেখা করেন তখন শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজে কথা না বললেও তাদের আশেপাশের মানুষদের বলা কথা শুনতে পান, কাজেই আপনি যে ব্যক্তির সাথে দেখা করছেন তাঁর সাথে কথা বললে তাঁর ভালো লাগবে।
  • খাওয়া-দাওয়া — যদি ক্যাটাটোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি খাবার না খান তবে তাঁদের এমন খাবার দিন যা তাঁরা পছন্দ করেন এবং খেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

আরও পড়ুন

আপনার ক্যাটাটোনিয়া হলে আপনার ডাক্তার বা নার্স আপনার যে-কোনো প্রশ্নের উত্তর দেবেন এবং আপনাকে আরও বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করবেন।

আপনি এখানে ক্যাটাটোনিয়া সম্পর্কে আরও তথ্য পাবেন :

  • ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এই ওয়েব পেজে চিকিৎসক, রোগী ও পরিচর্যাকারীদের জন্য ক্যাটাটোনিয়া সম্পর্কিত তথ্য রয়েছে।
  • ন্যাশনাল অটিস্টিক সোসাইটি এখানের তথ্যে ক্যাটাটোনিয়া কীভাবে অটিজমে আক্রান্ত মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে তা জানানো হয়েছে। এতে অটিজমে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি, রোগীর পিতামাতা, পরিচর্যাকারী ও পেশাদারদের জন্য নির্দেশিকা আছে।

কৃতজ্ঞতা

রয়াল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টস (Royal College of Psychiatrists)-এর পাবলিক এনগেজমেন্ট এডিটোরিয়াল বোর্ড (পিইইবি) তথ্যগুলো সংকলন করেছে। এটি বিদ্যমান সর্বোত্তম তথ্যের ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ লেখকগণ : ড. এমা সল্টার, ড. হুসাম খলিল, ড. নাবিল হেলাল

অনুরোধ সাপেক্ষে এই লেখাটির পূর্ণ তথ্যসূত্র পাওয়া যাবে।

This translation was produced by CLEAR Global (Feb 2025)

Read more to receive further information regarding a career in psychiatry