বাইপোলার ডিজঅর্ডার
Bipolar disorder
Below is a Bengali translation of our information resource on bipolar disorder. You can also view our other Bengali translations.
দাবি পরিত্যাগী
বাইপোলার ডিজঅর্ডার (কখনও কখনও বাইপোলার অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার বলা হয়) সম্পর্কে যারা আরও জানতে চান, এই লিফলেটটি তাদের জন্য। এটি বিশেষ করে বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি, তাদের বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়দের জন্য লেখা হয়েছে।
এই লিফলেটে যা বর্ণনা করা হয়েছে :
- বাইপোলার ডিজঅর্ডারের লক্ষণ ও উপসর্গ।
- আপনি সম্মুখীন হতে পারেন এমন কিছু সমস্যা।
- মোকাবিলা করার কিছু উপায়।
- প্রমাণ-ভিত্তিক চিকিৎসা।
সতর্কবাণী
এই লিফলেট তথ্য প্রদান করে, পরামর্শ নয়।
শুধুমাত্র সাধারণ তথ্য জানানোর জন্য এই লিফলেটের বিষয়বস্তু সাজানো হয়েছে। এটি এমন কোনও পরামর্শ প্রদান করে না বা এমন কোনও পরামর্শের উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়নি যার ওপর আপনার নির্ভর করা উচিত। এটি কোনোভাবেই নির্দিষ্ট পরামর্শের বিকল্প নয়।
অতএব, এই লিফলেটে দেওয়া তথ্যের আলোকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অথবা পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার আগে আপনাকে অবশ্যই প্রাসঙ্গিক পেশাজীবী বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার কোনও প্রশ্ন থাকলে বিলম্ব না করে ডাক্তার অথবা অন্যান্য পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করুন।
আপনি কোনও স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে মনে হলে অবিলম্বে একজন ডাক্তার অথবা অন্যান্য পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর কাছ থেকে চিকিৎসা নিন।
আমরা আমাদের লিফলেটগুলোতে সঠিক তথ্য দিতে ও হালনাগাদ করতে যৌক্তিক চেষ্টা করি, তবে আমরা কখনোই লিফলেটের বিষয়বস্তু সঠিক, পরিপূর্ণ ও হালনাগাদকৃত বলে কোনও প্রকারের নিশ্চয়তা প্রদান করি না।
বাইপোলার ডিজঅর্ডার কী?
একে বলা হতো 'ম্যানিক ডিপ্রেসিভ ইলনেস'। এই বাক্যাংশটি যেমনটি বোঝায়, এতে হঠাৎ করেই আপনার মেজাজের তীব্র পরিবর্তন হয়। অন্য ভাষায় বলা যায়, তীব্র মুড সুইং। এগুলো সাধারণত বেশ কয়েক সপ্তাহ বা মাসব্যাপী স্থায়ী হয়, এবং মানুষ সাধারণত যে ধরনের মানসিক উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়, তার চেয়ে অনেক তীব্র। এগুলো হতে পারে : ১
- নিম্ন বা 'মানসিক অবসাদগ্রস্ততা' — আপনি তীব্রভাবে হতাশ ও অবসাদগ্রস্ত থাকেন, এমনকি আশা হারিয়ে ফেলেন।
- উচ্চ বা 'ম্যানিক' — আপনি অত্যন্ত আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত এবং খুব বেশি সক্রিয় বোধ করেন। আপনার মধ্যে নিজেকে নিয়ে এবং আপনার সক্ষমতা সম্পর্কে খুব মহৎ ও বিভ্রান্তিকর ধারণার বিকাশ ঘটতে পারে।
- হাইপোম্যানিক — আপনার মেজাজ উচ্চ, তবে ম্যানিয়া বা উন্মত্ত মানসিকতার মতো চরম পর্যায়ের নয়।
- মিশ্রিত — আপনার মধ্যে ম্যানিয়া এবং মানসিক অবসাদগ্রস্ততার মিশ্রণ থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি মানসিক অবসাদগ্রস্ত বোধ করছেন, তবে আপনার মধ্যে অস্থিরতা এবং ম্যানিয়ার অতিরিক্ত সক্রিয়তাও থাকবে।
মেজাজের এই অবস্থাগুলো নিচে আরও বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
বাইপোলার ডিজঅর্ডার কতটা সাধারণ?
প্রতি ৫০ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে প্রায় ১ জনের জীবনের কোনও না কোনও সময় বাইপোলার ডিজঅর্ডার দেখা দেয়। এটি সাধারণত ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। ৫০১ বছরের পরে এটি হওয়া বিরল।
কোন কোন ধরনের বাইপোলার ডিজঅর্ডার আছে?
বাইপোলার ডিজঅর্ডারের নিচের ধরনগুলো দেখা যায়২ :
বাইপোলার টাইপ ১
- আপনার কমপক্ষে একটি উচ্চ বা ম্যানিক এপিসোড রয়েছে, যা সাধারণত এক সপ্তাহের অনেক বেশি সময় ধরে চলে।
- আপনার শুধুমাত্র ম্যানিক এপিসোড থাকতে পারে, যদিও বাইপোলার ১-এ আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষ গভীরভাবে মানসিক অবসাদগ্রস্ত থাকে।
- চিকিৎসা করা না হলে একটি ম্যানিক এপিসোড সাধারণত ৩ থেকে ৬ মাস স্থায়ী হয়।
- ডিপ্রেসিভ এপিসোডগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয় — চিকিৎসা ছাড়াই ৬ থেকে ১২ মাস।
বাইপোলার টাইপ ২
- তীব্র মানসিক অবসাদের একাধিক এপিসোড থাকে, তবে এতে ম্যানিক এপিসোডের পরিমাণ অল্প — একে বলা হয় 'হাইপোম্যানিয়া'।
র্যাপিড সাইক্লিং
- ১২ মাস সময়কালে আপনার চারটি মুড বা তার বেশি এপিসোড থাকে। এটি বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জনকে প্রভাবিত করে এবং টাইপ ১ ও টাইপ ২ উভয়ের সাথেই ঘটতে পারে।
সাইক্লোথিমিয়া
- পূর্ণ বাইপোলার ডিজঅর্ডারের তুলনায় মুড সুইং কম তীব্র হলেও এটি দীর্ঘতর হতে পারে, যা সময়ের সাথে পূর্ণ বাইপোলার ডিজঅর্ডারে পরিণত হতে পারে।
বাইপোলার ডিজঅর্ডার কী কারণে হয়?
বাইপোলার ডিজঅর্ডার, তীব্র মানসিক অবসাদ বা সিজোফ্রেনিয়ায় রোগের সাথে একই জিনগত ঝুঁকির কারণ (রিস্ক ফ্যাক্টর) জড়িত। এছাড়া পরিবেশগত ঝুঁকির কারণও রয়েছে যা এসব রোগের বিকাশ বাড়াতে বা কমাতে জিনগত ঝুঁকির সাথে কাজ করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, আপনার জিনগত ঝুঁকি থাকার অর্থ হলো আপনার বাইপোলার ডিজঅর্ডার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে আপনি একটি স্থির ও ইতিবাচক পরিবেশে বেড়ে উঠলে অথবা বসবাস করলে আপনার গুরুতর মানসিক রোগ বিকাশের ঝুঁকি কম হতে পারে।
আপনার গুরুতর মানসিক রোগ বিকাশের সবচেয়ে পরিচিত ঝুঁকির কারণ হলো পিতা বা মাতার গুরুতর মানসিক রোগ (যেমন বাইপোলার)। মা অথবা বাবার তীব্র মানসিক রোগ থাকলে প্রতি ৩ জনের মধ্যে ১ জনের মানসিক রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
বাইপোলার ডিজঅর্ডার হওয়ার কারণগুলো নিয়ে ভাবার সময় এটা মনে রাখা দরকার যে এর সাথে অনেকগুলো বিষয় জড়িত, এবং এর পেছনে কোনও একক কোনও কারণ দায়ী নয়।৩
বাইপোলার ডিজঅর্ডার হলে কেমন অনুভূত হয়?
মানসিক অবসাদ
আমরা সকলেই মাঝে মাঝে মানসিক অবসাদে ভুগি।৪ এটি আমাদের জীবনের সমস্যাগুলো চিনতে এবং মোকাবেলা করতে সাহায্য করতে পারে। তবে তীব্র মানসিক অবসাদ বা বাইপোলার রোগ হলে এই অনুভূতিগুলো অনেক বেশি তীব্র হয়।৫ ৬ এগুলো দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকে এবং জীবনের স্বাভাবিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা করা কঠিন বা অসম্ভব করে তোলে।৫ মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লে আপনি নিচের সবগুলো অথবা কিছু বিষয় লক্ষ্য করবেন :
আবেগজনিত পরিবর্তন
- স্থায়ী অসুখী অনুভূতি।
- এমন অনুভূতি যার কারণে আপনি অকারণে কান্নায় ফেটে পড়তে চান।
- বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ হারানো।
- কিছু উপভোগ করতে না পারা।
- অস্থির ও উত্তেজিত বোধ করা।
- আত্মবিশ্বাস হারানো।
- অকেজো, অনুপযুক্ত এবং আশাহীন বোধ করা।
- স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খিটখিটে মেজাজ থাকা।
- আত্মহত্যার চিন্তা করা।
চিন্তা করতে অসুবিধা
- ইতিবাচক বা আশাবাদী চিন্তা করতে না পারা।
- সহজ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাও কঠিন মনে হওয়া।
- ঠিকমতো মনোযোগ দিতে না পারা।
শারীরিক লক্ষণ
- খেতে এবং ওজন কমাতে না চাওয়া।
- ঘুমাতে কষ্ট হওয়া।
- খুব তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে যাওয়া এবং পুনরায় ঘুমাতে না পারা।
- অসম্ভব ক্লান্ত বোধ করা।
- কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া।
- যৌনতার প্রতি আগ্রহ হারানো।
আচরণ
- কোনও কাজ শুরু বা শেষ করতে কঠিন লাগা — এমনকি দৈনন্দিন কাজও।
- অনেক কান্নাকাটি করা, কিংবা মনে হওয়া যে আপনি কাঁদতে চাইছেন কিন্তু পারছেন না।
- অন্য মানুষদের এড়িয়ে চলা।
ম্যানিয়া (উন্মত্ত মানসিকতা)
আপনি তীব্রভাবে ভালো, উদ্যমী এবং আশাবাদী বোধ করেন — এতটাই বেশি যে এটি আপনার চিন্তাভাবনা এবং বিচারকে প্রভাবিত করে। নিজের সম্পর্কে অদ্ভুত বিশ্বাস জন্মায়। খারাপ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। বিব্রতকর, ক্ষতিকারক এবং অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করতে পারেন।
মানসিক অবসাদের মতো এই ক্ষেত্রেও দৈনন্দিন জীবনযাপন কঠিন বা অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। ম্যানিয়া আপনার সম্পর্ক এবং কাজ উভয়কেই খারাপভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
এটি তীব্র না হলে একে 'হাইপোম্যানিয়া' বলা হয়। এটি তখনও আপনার বিচার এবং অন্য মানুষের সাথে মেলামেশাকে১ প্রভাবিত করতে পারে।
ম্যানিক অবস্থায় আপনি নিজের মধ্যে বেশ কিছু জিনিস লক্ষ্য করতে পারেন :
আবেগী
- খুব খুশি এবং উত্তেজিত।
- খুব খিটখিটে (এর কারণ হলো অনেকসময় মানুষকে আপনার অস্বাভাবিক ইতিবাচক ধারণা বোঝাতে পারেন না, অথবা মানুষকে আপনার কথা মতো কিছু করাতে পারেন না)।
- স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অনুভব করা।
চিন্তাধারা
- নতুন ও উত্তেজনাপূর্ণ ধারণায় পরিপূর্ণ।
- দ্রুত ধারণা পরিবর্তন হচ্ছে, এবং কী ভাবছেন বা বলতে চাইছেন তা ভুলে যাওয়া বা ব্যাখ্যা করতে না পারা।
- এমন কণ্ঠস্বর কানে আসে যা অন্য কেউ শুনতে পায় না।
শারীরিক
- প্রবল কর্মশক্তি এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সক্রিয়।
- ঘুমাতে অক্ষম বা অনিচ্ছুক।
- যৌনতায় বেশি আগ্রহী হতে পারেন।
চালচলন ও আচরণ
- জমকালো ও অবাস্তব পরিকল্পনা করা।
- খুব সক্রিয় থাকা এবং খুব দ্রুত চলাচল করা।
- স্বাভাবিকের চেয়ে ভিন্ন আচরণ করা।
- খুব দ্রুত কথা বলা — এত দ্রুত যে আপনি কী বলছেন অন্যদের পক্ষে তা বোঝা কঠিন হতে পারে।
- মুহূর্তের মধ্যে অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যা অনেকসময় বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনে।
- বেপরোয়াভাবে টাকা খরচ করা।
- অন্য মানুষদের সাথে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠ হওয়া বা তাদের বেপরোয়া সমালোচনা করা।
- স্বাভাবিকের চেয়ে কম সংযত থাকা।
প্রথমবার ম্যানিক এপিসোড হলে আপনার সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হতে পারে, তবে আপনার বন্ধু ও স্বজনরা সাধারণত বুঝতে পারবেন যে কিছু একটা গণ্ডগোল হচ্ছে। কেউ আপনাকে এটি দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে আপনি বিরক্ত হতে পারেন। আপনি দৈনন্দিন জীবনযাপন ও অন্য মানুষদের অনুভূতি নিয়ে সচেতনতা হারাবেন।
মনস্তাত্ত্বিক লক্ষণ
ম্যানিয়ার এপিসোড অথবা মানসিক অবসাদ খুব তীব্র হলে আপনার মধ্যে বিভ্রান্তিকর ধারণা১ তৈরি হতে পারে।
- ম্যানিক এপিসোডে — আপনার মনে নিজের সম্পর্কে এমন দুর্দান্ত বিশ্বাস জন্মায় যে আপনি কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত অথবা আপনার বিশেষ ক্ষমতা বা দক্ষতা আছে।
- ডিপ্রেসিভ এপিসোডে — আপনার মনে হতে পারে যে আপনি একাই দোষী এবং আপনি সবার চেয়ে খারাপ, অথবা আপনার কোনও অস্তিত্বই নেই।
এই অস্বাভাবিক বিশ্বাসগুলোর পাশাপাশি আপনার হ্যালুসিনেশন হতে পারে — আপনি শব্দ শুনবেন, গন্ধ পাবেন, কিছু অনুভব করবেন বা দেখবেন, তবে আশেপাশে এগুলোর উৎস খুঁজে পাবেন না।
এপিসোডগুলোর মধ্যবর্তী সময়ে
বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত কিছু মানুষ মনে করেন যে এক মুড সুইং থেকে আরেক মুড সুইংয়ের মধ্যবর্তী সময়ে তারা শান্ত ও স্থির থাকেন, তবে অনেকের ক্ষেত্রেই এটা সত্য নয়। অন্যেরা আপনাকে আগের চেয়ে সুস্থ বলে মনে করলেও আপনি মানসিক অবসাদগ্রস্ত বোধ করতে পারেন এবং আপনার চিন্তা করতে সমস্যা হতে পারে।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারের কোনও এপিসোড দেখা দিলে আপনাকে কিছু সময়ের জন্য গাড়ি চালানো বন্ধ রাখতে হবে। আপনার বাইপোলার ডিজঅর্ডার থাকলে অবশ্যই ড্রাইভার অ্যান্ড ভেহিকেল লাইসেন্সিং এজেন্সি বা ডিভিএলএ-কে অবহিত করবেন। ডিভিএলএ-এর ওয়েবসাইটে এ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য সাহায্য পাওয়া
আমি কার কাছে যাব?
আপনি প্রথমে আপনার জিপিকে দেখাতে পারেন, বিশেষ করে আপনার যদি ডিপ্রেসিভ এপিসোড থাকে। আপনার মধ্যে বাইপোলার ডিজঅর্ডার সনাক্ত হলে তিনি আপনাকে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাবেন। এনআইসিই নির্দেশিকা অনুযায়ী, শুধুমাত্র একজন বিশেষজ্ঞই৭ মুড স্ট্যাবিলাইজার (মেজাজ স্থিতিশীল রাখার ওষুধ) দিতে পারবেন, এমনকি আপনি পরবর্তীতে একজন জিপির তত্ত্বাবধানে থাকলেও।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার সময় আপনার সাথে কমিউনিটি মেন্টাল হেলথ টিমের (সিএমএইচটি) অন্যান্য সদস্যদের সাথেও সাক্ষাৎ হবে। তারা মানসিক সমর্থন, তথ্য ও মনস্তাত্ত্বিক হস্তক্ষেপের ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবেন, এবং বাস্তবিক বিষয়াবলী গুছিয়ে নিতে সহযোগিতা করবেন।
আপনার ওষুধ কাজ করছে বলে মনে হলে আপনার জিপি প্রায় পুরো দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন, যদিও তিনি সাধারণত চাইবেন আপনি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং সিএমএইচটি-এর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য ওষুধ
কিছু জিনিস আছে যা মুড সুইংকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে যাতে এটা ম্যানিয়ার এপিসোড বা মানসিক অবসাদে পরিণত না হয়। এগুলো নিচে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এরপরেও যেসব কারণে ওষুধ দরকার হতে পারে :
- আপনার মেজাজ স্থিতিশীল রাখতে (প্রফিল্যাক্সিস)
- ম্যানিক বা ডিপ্রেসিভ এপিসোডের চিকিৎসা করতে।
মেজাজ স্থিতিশীল করার ওষুধ
বেশ কিছু মুড স্ট্যাবিলাইজার রয়েছে, এগুলোর মধ্যে কিছু মৃগী রোগ অথবা সিজোফ্রেনিয়ার8 চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। মুড সুইং কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে আপনার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ একাধিক ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।৯
লিথিয়াম
লিথিয়াম কয়েক দশক ধরে একটি মুড স্ট্যাবিলাইজার হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে এটি কীভাবে কাজ করে তা এখনও পরিষ্কার নয়। বাইপোলার ডিজঅর্ডারের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার জন্য এটি এখনও প্রথম পছন্দ এবং ম্যানিক ও ডিপ্রেসিভ এপিসোডের চিকিৎসার জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া লিথিয়াম দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা যাবে না। সঠিক মাত্রায় লিথিয়াম সেবন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ — পরিমাণে কম হলে এটি কাজ করবে না, বেশি হলে এটি আপনার ক্ষতি করবে। সুতরাং, আপনি সঠিক ডোজ পাচ্ছেন কি না নিশ্চিত হতে প্রথম কয়েক সপ্তাহ আপনাকে নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে।১ ১০ ডোজ স্থিতিশীল মাত্রায় চলে আসলে আপনার জিপি আপনাকে লিথিয়াম লিখে দিতে পারবেন এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য আপনার নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারবেন।
রক্তে লিথিয়ামের তুলনায় শরীরে পানির পরিমাণ সঠিক মাত্রায় থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে পানিশূন্যতা হলে আপনার রক্তে লিথিয়ামের মাত্রা বেড়ে যাবে, এবং আপনার বিষাক্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে।১ সুতরাং, মনে রাখবেন :
- প্রচুর পানি পান করুন — গরম আবহাওয়ায় বা শারীরিক সক্রিয়তা থাকলে আরও বেশি।
- চা ও কফি পানের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন — এগুলো আপনার প্রস্রাবের সাথে যাওয়া পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
লিথিয়াম ঠিকভাবে কাজ করতে তিন মাস বা তার বেশি সময় লাগতে পারে। এই সময়ে আপনার মুড সুইং অব্যাহত থাকলেও ওষুধ সেবন চালিয়ে যাওয়া উত্তম।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
লিথিয়াম চিকিৎসা শুরু করার পর প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এগুলো বিরক্তিকর ও অপ্রীতিকর লাগতে পারে, তবে এগুলো দ্রুত চলে যায় অথবা সময়ের সাথে ভালো হয়ে যায়।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে আছে :
- তৃষ্ণা লাগা।
- স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ও ঘন ঘন প্রস্রাব করা।
- ওজন বৃদ্ধি।
কম সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হলো :
- ঝাপসা দৃষ্টি।
- পেশীর সামান্য দুর্বলতা।
- মাঝেমধ্যে ডায়রিয়া।
- হাতে হালকা কাঁপুনি।
- হালকা অসুস্থ অনুভূত হওয়া।
লিথিয়ামের ডোজ কমানোর মাধ্যমে এগুলো সাধারণত ভালো হয়।
নিচের লক্ষণগুলো নির্দেশ করে যে আপনার শরীরে লিথিয়ামের মাত্রা খুব বেশি। এগুলো লক্ষ্য করলে অবিলম্বে ডাক্তারকে জানান :
- খুব তৃষ্ণার্ত অনুভব করা।
- ভীষণ ডায়রিয়া বা বমি হওয়া।
- হাত ও পা কাঁপা।
- পেশী মোচড় দেওয়া।
- বিভ্রান্ত অনুভব করা।
রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা
আপনার রক্তে লিথিয়ামের সঠিক মাত্রা নিশ্চিত করতে প্রথমত আপনাকে কয়েক সপ্তাহ পর পর রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। যতক্ষণ আপনি লিথিয়াম গ্রহণ করবেন, ততক্ষণ আপনার এই পরীক্ষাগুলোর প্রয়োজন হবে। তবে প্রথম কয়েক মাস পর পরীক্ষার মাত্রা ধীরে ধীরে কমে আসবে।
লিথিয়ামের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার কিডনি বা থাইরয়েড গ্রন্থিকে প্রভাবিত করতে পারে। এই অঙ্গগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কি না নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে প্রতি কয়েক মাস পর পর রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করাতে হবে। কোনও সমস্যা দেখা দিলে আপনাকে লিথিয়াম বন্ধ করতে হবে এবং আপনার ডাক্তারের সাথে বিকল্প নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
নিজের যত্ন নেওয়া৫
- সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।
- নিয়মিত মিষ্টি ছাড়া তরল পান করুন। এটি আপনার শরীরে লবণ ও তরলের ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে। কোলা এবং কোমল পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুন, কারণ এগুলোতে প্রচুর চিনি থাকে।
- নিয়মিত খাবার খান — এটিও আপনার শরীরে তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
- চা, কফি বা কোলায় ক্যাফেইন থাকে, এ ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। ক্যাফেইনের কারণে বেশি প্রস্রাব হয়, যা আপনার শরীরে লিথিয়ামের মাত্রা ওলটপালট করে দিতে পারে।
অন্যান্য মুড স্ট্যাবিলাইজার
লিথিয়াম ব্যতীত অন্যান্য ওষুধেও কাজ হতে পারে। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর এসব ওষুধ দেওয়া নির্ভর করে, যেমন ম্যানিক বা ডিপ্রেসিভ এপিসোড কোনটির জন্য দেওয়া হচ্ছে এবং সে ব্যক্তি ইতিমধ্যেই কোনও মানসিক অবসাদের ওষুধ (অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট) নিচ্ছেন কি না।
- মৃগীরোগের ওষুধ / অ্যান্টিকনভালসেন্টস :
- সোডিয়াম ভালপ্রোয়েট হলো একটি অ্যান্টি-কনভালসেন্ট যা সম্ভবত লিথিয়ামের মতোই কাজ করে, তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদের কাছে এখনও যথেষ্ট প্রমাণ নেই। গর্ভাবস্থায় সেবন করা হলে এটি অনাগত শিশুর ক্ষতি করতে পারে, তাই গর্ভবতী হতে পারে এমন কাউকে এটি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাবে না।
- কার্বামাজেপাইন এবং ল্যামোট্রিজিনও অনেকের জন্য কার্যকর।
- অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ : হ্যালোপেরিডল, ওলানজাপিন, কুটায়াপিন এবং রিস্পেরিডোন।
কখন মুড স্ট্যাবিলাইজার শুরু করবেন
শুধুমাত্র একটি এপিসোডের পরে আপনার আরেকটি এপিসোড হওয়ার সম্ভাবনা অনুমান করা কঠিন। অনেকে এই পর্যায়ে মুড স্ট্যাবিলাইজার শুরু করতে চান না, তবে ম্যানিয়ার এপিসোডগুলো তীব্র ও খুব সমস্যাপূর্ণ হতে পারে।
আপনার দ্বিতীয় এপিসোড হলে ভবিষ্যতে আপনার আরও এপিসোড হওয়ার বেশ ভালো সম্ভাবনা রয়েছে, তাই এই পরিস্থিতিতে একটি মুড স্ট্যাবিলাইজার সেবনের দৃঢ় পরামর্শ দেওয়া হয়।
কত সময় ধরে মুড স্ট্যাবিলাইজার ওষুধ নিতে হবে?
অন্তত পক্ষে :
- বাইপোলার ডিজঅর্ডারের একটি এপিসোডের পর দুই বছর পর্যন্ত।
- যেসব ক্ষেত্রে পাঁচ বছর পর্যন্ত :
- পূর্বে অবস্থার উন্নতি হওয়ার পর বার বার খারাপের দিকে গেলে
- সাইকোটিক এপিসোড হলে
- অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা মাদক সেবন করলে
- বাড়িতে বা কর্মক্ষেত্রে ক্রমাগত চাপে থাকলে।
আপনি যদি আপনার ওষুধ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করুন। বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য ওষুধ বন্ধ করার পর ২ বছর ধরে আপনার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করা উত্তম, এতে করে এই রোগ ফিরে আসার লক্ষণের জন্য তারা আপনাকে পরীক্ষা করতে পারবেন।
সমস্যাপূর্ণ মুড এপিসোড অব্যাহত থাকলে আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ওষুধ চালিয়ে যেতে হতে পারে।
আমার জন্য সবচেয়ে কার্যকর ঔষধ কী?
আপনাকে আপনার ডাক্তারের সাথে এই ব্যাপারে আলোচনা করতে হবে, তবে কিছু সাধারণ নিয়মাবলী রয়েছে।
- লিথিয়াম সাধারণত ডাক্তারদের প্রথম পছন্দ; সোডিয়াম ভালপ্রোয়েট দ্বিতীয় পছন্দ, যদিও এটি লিথিয়ামের সাথে একত্রে দেওয়া হতে পারে। লিথিয়াম এবং সোডিয়াম ভালপ্রোয়েট কাজ না করলে ওলানজাপিন পরখ করে দেখা পারে।
- এছাড়া কুটায়াপিন ব্যবহার করা হতে পারে, বিশেষ করে কেউ ম্যানিক এপিসোডগুলোর মাঝে অবসাদগ্রস্ত থাকলে।৮
- বাইপোলার ২ ডিজঅর্ডার বা বাইপোলার ডিপ্রেশনের জন্য আপনাকে ল্যামোট্রিজিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে, তবে ম্যানিয়ার জন্য নয়।
- কখনও কখনও ওষুধগুলোর সংমিশ্রণ করার প্রয়োজন হয়।
আপনাকে কোন ওষুধ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে তা নির্ভর করে কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহারের ফলে আপনি কতটা উপকৃত হচ্ছেন তার ওপর। একজনের জন্য যে ওষুধ উপকারী, তা আরেকজনের জন্য উপকারী বা প্রযোজ্য না-ও হতে পারে।
ওষুধ সেবন না করলে কী হতে পারে?
লিথিয়াম আপনার পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ৩০–৪০%৮ কমিয়ে দেয়, কিন্তু আপনি যত বেশি সংখ্যক ম্যানিক এপিসোডের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন, আপনার আরেকটি ম্যানিক এপিসোড হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
পূর্ববর্তী ম্যানিক এপিসোডের সংখ্যা | সামনের বছরে আরেকটি এপিসোডের হওয়ার সম্ভাবনা | |
---|---|---|
লিথিয়াম না নেওয়া | লিথিয়াম নেওয়া | |
১–২ | ১০% (প্রতি ১০০ জনে ১ জন) | ৬–৭% (প্রতি ১০০ জনে ৬–৭ জন) |
৩–৪ | ২০% (প্রতি ১০০ জনে ২০ জন) | ১২% (প্রতি ১০০ জনে ১২ জন) |
৫+ | ৪০% (প্রতি ১০০ জনে ৪০ জন) | ২৬% (প্রতি ১০০ জনে ২৬ জন) |
আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে পরবর্তী এপিসোড হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা একই থাকে। এমনকি আপনি দীর্ঘ সময়ের জন্য সুস্থ থাকলেও আপনার পরবর্তী এপিসোড হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
গর্ভাবস্থা এবং বাইপোলার ডিজঅর্ডারের চিকিৎসা
আপনার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে গর্ভাবস্থার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। গর্ভাবস্থায় এবং সন্তান জন্মের পরবর্তী প্রথম কয়েক মাসে আপনার মেজাজ পরিচালনার বিষয়ে আপনার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরিকল্পনা করতে পারেন। আপনি গর্ভবতী হলে অথবা গর্ভবতী হওয়ার পরিকল্পনা করে থাকলে লিথিয়াম এবং সোডিয়াম ভালপ্রোয়েট ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া উচিত নয়।
লিথিয়াম গ্রহণ করাকালীন আপনি গর্ভবতী হলে আপনার লিথিয়াম ব্যবহার বন্ধ করা উচিত কি না জানতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করুন। গর্ভাবস্থায় অন্যান্য মুড স্ট্যাবিলাইজারের তুলনায় লিথিয়াম নিরাপদ, তবে এর কারণে শিশুর হৃদরোগের যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে। আপনার অবসাদগ্রস্ত হয়ে যাওয়া বা ম্যানিক এপিসোডে চলে যাওয়ার ঝুঁকির সাথে এই ঝুঁকিটির তুলনা করা দরকার।
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। গর্ভাবস্থার ২৬তম সপ্তাহের পর লিথিয়াম নিরাপদ, যদিও আপনি লিথিয়াম গ্রহণ করলে আপনার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত নয়, কারণ এটি আপনার শিশুর জন্য বিষাক্ত হতে পারে।১২
উল্লিখিত মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা শুরু করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা আপনার জন্য উত্তম হবে।
গর্ভাবস্থার সময় প্রসূতি বিশেষজ্ঞ, ধাত্রী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, জিপি, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং কমিউনিটি সাইকিয়াট্রিক নার্সসহ প্রত্যেককে একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ ও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা
ডিপ্রেসিভ এপিসোডের সময় কিংবা ম্যানিয়া এবং ডিপ্রেসিভ এপিসোডের মধ্যবর্তী সময়ে মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা সহায়ক হতে পারে।১ ৫ ১১ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে :
- মানসিক স্বাস্থ্যশিক্ষা — বাইপোলার ডিজঅর্ডার সম্পর্কে আরও শেখা ও জানা
- মেজাজ পর্যবেক্ষণ — আপনার মেজাজের তারতম্য হতে শুরু করলে তা দ্রুত বুঝতে শেখা
- সাধারণ মোকাবিলা করার দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করা
- ডিপ্রেসিভ এপিসোডগুলোসহ এই ধরনের এপিসোডগুলোর মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কগনিটিভ বিহেভিয়েরাল থেরাপি (সিবিটি) (সাধারণত ৩ থেকে ৪ মাস সময়কালে প্রায় ১৬ থেকে ২০ ঘন্টার সেশন এই চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত)
- ইন্টারপার্সোনাল থেরাপি (আইপিটি)
- দম্পতি (কাপল) থেরাপি
- পারিবারিক মিটিং।
ম্যানিক বা ডিপ্রেসিভ এপিসোডের চিকিৎসা করা
ডিপ্রেসিভ এপিসোড (মানসিক অবসাদের পর্ব)
- আপনার মানসিক অবসাদ অন্তত কিছুটা গুরুতর হলে আপনার ডাক্তার যেসব পরামর্শ দিতে পারেন :
- ওলানজাপিন (একটি অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ যা মেজাজ স্থিতিশীলকারী হিসাবে কাজ করে)-এর সাথে ফ্লুওক্সেটিন (একটি এসএসআরআই অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট)
- কুটায়াপিন
- উল্লিখিত চিকিৎসা সহায়ক না হলে অন্যান্য বিকল্প
- আপনি ইতিমধ্যে লিথিয়াম বা সোডিয়াম ভালপ্রোয়েট গ্রহণ করে থাকলে কুটায়াপিন যোগ করা সহায়ক হতে পারে।
- সাম্প্রতিক সময়ে আপনার ম্যানিক এপিসোড বা র্যাপিড-সাইক্লিং ডিজঅর্ডার হয়ে থাকলে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট আপনাকে ম্যানিক সুইংয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে। অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ছাড়াই মুড স্ট্যাবিলাইজারের ডোজ বাড়ানো নিরাপদ হতে পারে।
- অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টের প্রভাবে আপনার মেজাজ ভালো হতে দুই থেকে ছয় সপ্তাহ সময় নিতে পারে, তবে শুরুর দিকে সাধারণত ঘুম ও ক্ষুধার উন্নতি হয়। মানসিক অবসাদ পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার পর চার সপ্তাহ ধরে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট চালিয়ে যেতে হবে। তারপর আপনাকে কোনও ওষুধ দেওয়া হবে না কি টকিং থেরাপি (কথা বলার সেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা) দেওয়া হবে তা নিয়ে আপনার চিকিৎসক আপনার সাথে আলোচনা করবেন। যদি আপনার অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট বন্ধ করতে হয়, সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার আগে এটি গ্রহণের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমাতে হবে।
- আপনার যদি বারবার ডিপ্রেসিভ এপিসোড হয়, কিন্তু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট নেওয়ার ফলে যদি কখনোই ম্যানিয়ায় পরিণত না হয়, তাহলে পরবর্তী এপিসোড এড়াতে আপনি মুড স্ট্যাবিবিলাইজার এবং অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট উভয়ই চালিয়ে যেতে পারেন।
- ম্যানিক এপিসোড থাকলে আপনার দীর্ঘ মেয়াদে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট গ্রহণ করা উচিত নয়।
ম্যানিয়া এবং ডিপ্রেসিভ এপিসোড
যে-কোনো অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট বন্ধ করা উচিত। হ্যালোপেরিডল, ওলানজাপিন, কুটায়াপিন বা রিস্পেরিডোন ম্যানিক এপিসোডের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো ভালোভাবে কাজ না করলে লিথিয়াম যোগ করা যেতে পারে।
চিকিৎসা শুরু হলে সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে লক্ষণগুলোর উন্নতি দেখা যায়, তবে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। এ ধরণের ওষুধ খাওয়া অবস্থায় আপনি গাড়ি চাইলে আগে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
অন্যান্য সাহায্য
খুব বেশি সমস্যা হলে জানান। অসুস্থ অবস্থায় অনেক বেশি অর্থ খরচ করে ফেললে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য টিম আপনার ব্যাংক বা পাওনাদারদের সাথে মধ্যস্ততা করতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এরকম হলে আপনি একজন পরিচর্যাকারী বা কোনও আত্মীয়কে আপনার প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচন করার কথা ভেবে দেখতে পারেন।
আপনার মুড সুইং পরিচালনা
স্ব-পর্যবেক্ষণ
আপনার মেজাজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার লক্ষণগুলো জানুন যাতে করে আপনি দ্রুত সাহায্য পেতে পারেন। এতে করে আপনি পূর্ণ-বিকশিত এপিসোড এবং হাসপাতালে ভর্তি উভয়ই এড়াতে সক্ষম হতে পারেন। একটি ডায়েরিতে জীবনের কোন বিষয়গুলো আপনার জন্য উপকারী এবং কোনগুলো আপনার জন্য ভালো নয়, সেসব লিখে রাখতে পারেন।
জ্ঞান
আপনার অসুস্থতা এবং এটা প্রতিকারে কী কী সাহায্য পাওয়া যায় জানুন। এই লিফলেটের শেষে আরও তথ্যসূত্র আছে। নিচে কিছু সাপোর্ট গ্রুপ এবং সাহায্যকারী সংস্থার তথ্য দেওয়া আছে, সেগুলো দেখুন।
চাপ
বিশেষ চাপের পরিস্থিতি এড়াতে চেষ্টা করুন — চাপের কারণে আপনার ম্যানিক বা ডিপ্রেসিভ এপিসোড শুরু হতে পারে। সমস্ত চাপ এড়ানো সম্ভব নয়, তাই এগুলো বুদ্ধির সাথে মোকাবিলা করার উপায় শিখুন। আপনি অনলাইনে অথবা আপনার টিভি বা কম্পিউটারে সিডি বা ডিভিডির মাধ্যমে চাপ কমানোর প্রশিক্ষণ শুরু করতে পারেন, কোনও রিলাক্সেশন গ্রুপে যোগ দিতে পারেন অথবা ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিতে পারেন।
সম্পর্ক
মানসিক অবসাদ এবং ম্যানিয়া বন্ধু ও পরিবারের ওপর অনেক চাপ সৃষ্টি করতে পারে — একটি এপিসোডের পর আপনাকে কিছু সম্পর্ক পুনর্নির্মাণ করতে হতে পারে।
বিশ্বাস ও নির্ভর করা যায় এমন অন্তত একজন থাকলে কাজটি সহজ হয়। আপনি সুস্থ থাকা অবস্থায় আপনার কাছের মানুষদেরকে আপনার অসুস্থতা ব্যাখ্যা করুন। তাদেরকে জানতে হবে আপনার কী হচ্ছে এবং তারা আপনার জন্য কী করতে পারেন।
কার্যক্রম
আপনার জীবন, কাজ, অবসর, এবং আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করুন। খুব ব্যস্ত হয়ে গেলে আপনার ম্যানিক এপিসোড শুরু হতে পারে।
নিশ্চিত করুন আপনার বিশ্রাম নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় আছে যাতে আপনি শান্ত হতে পারেন। আপনি কর্মহীন হলে কোনও কোর্স করার কথা ভাবুন, অথবা এমন স্বেচ্ছাসেবার কথাও ভাবতে পারেন যার সাথে মানসিক অসুস্থতার সম্পর্ক নেই।
ব্যায়াম
সপ্তাহে তিন বার ২০ মিনিট যৌক্তিকভাবে ভারী ব্যায়াম করলে মেজাজ ভালো থাকে।
আনন্দ
নিয়মিত এমন কিছু করুন যা আপনি উপভোগ করেন এবং যা আপনার জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।
আপনার ওষুধ চালিয়ে যান।
আপনার ডাক্তার নিরাপদ মনে করার আগেই আপনি নিজের ওষুধ বন্ধ করতে চাইতে পারেন, তবে এর ফলে আপনার আরেকটি মুড সুইং শুরু হতে পারে। সুস্থ থাকা অবস্থায় আপনার ডাক্তার ও পরিবারের সাথে এটি নিয়ে কথা বলুন।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য আপনার চিকিৎসার বিষয়ে আপনার মতামত দিন
আপনি যদি বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন, তাহলে আপনি আপনার ডাক্তার ও পরিবারের সাথে আলোচনা করে লিখিত আকারে যা জানাতে চাইতে পারেন :
- একটি 'অগ্রিম বিবৃতি' — আপনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে আপনি কীভাবে চিকিৎসা করাতে চান তা নির্ধারণ করতে (এতে আপনার স্বাস্থ্য বা পরিচর্যার জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে-কোনো তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে)
- একটি 'অগ্রিম সিদ্ধান্ত' — এমন কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসাপদ্ধতি যা আপনি গ্রহণ করতে চান না।
আমি আমার জিপি থেকে কী আশা করতে পারি? (শুধুমাত্র ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস)
আপনার বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য আপনি লিথিয়াম বা অন্য কোনও ওষুধ গ্রহণ করে থাকলে আপনার জিপি আপনাকে একটি বার্ষিক শারীরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা১ দেবেন বলে আশা করা যায়। এই পরীক্ষায় যা কিছু অন্তর্ভুক্ত থাকবে :
- রক্তচাপ।
- ওজন এবং বডি ম্যাস ইনডেক্স (বিএমআই)।
- ধূমপান ও অ্যালকোহলের ব্যবহার।
- রক্তে শর্করার মাত্রা।
- লিপিড মাত্রা (৪০ বছরের বেশি বয়সী সমস্ত রোগীদের জন্য)
- আপনি লিথিয়াম গ্রহণ করে থাকলে আপনার যা যা প্রয়োজন হবে :
- প্রতি ৩–৬ মাস অন্তর লিথিয়াম স্তরের পরীক্ষা।
- প্রতি ৬ মাসে থাইরয়েড এবং কিডনির কার্যকারিতার জন্য একটি রক্ত পরীক্ষা। কোনও সমস্যা হলে আপনাকে আরও ঘন ঘন এই রক্ত পরীক্ষাগুলো করাতে হবে।
পরিবার ও বন্ধুদের জন্য তথ্য
ম্যানিয়া বা মানসিক অবসাদ পরিবার ও বন্ধুদের জন্য কষ্টদায়ক এবং ক্লান্তিকর হতে পারে।
মুড এপিসোড মোকাবিলা করা
মানসিক অবসাদ
খুব অবসাদগ্রস্ত কোনও ব্যক্তিকে কী বলবেন তা বোঝা কঠিন হতে পারে। তারা সবকিছুকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন এবং তারা আপনার কাছ থেকে কী চায় তা বলতে সক্ষম না-ও হতে পারেন। তারা বিচ্ছিন্ন এবং খিটখিটে মেজাজের হতে পারেন, কিন্তু একই সময়ে তাদের আপনার সাহায্য ও সমর্থন প্রয়োজন। তারা উদ্বিগ্ন হলেও পরামর্শ গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক বা অক্ষম হতে পারেন। যতটা সম্ভব ধৈর্যশীল হোন এবং বোঝার চেষ্টা করুন।
ম্যানিয়া (উন্মত্ত মানসিকতা)
ম্যানিক মুড সুইংয়ের শুরুতে ব্যক্তি খুশি, উদ্যমী এবং মিশুক হবেন, এবং যে-কোনো অনুষ্ঠান বা উত্তপ্ত আলোচনার 'মধ্যমণি’ হবেন। তবে এই ধরনের পরিস্থিতির উত্তেজনা তাদের মেজাজ আরও চরমে নিয়ে দেবে। সুতরাং, এরূপ পরিস্থিতি থেকে তাদেরকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। আপনি তাদেরকে সাহায্য নেওয়ার জন্য প্ররোচিত করতে পারেন, অথবা তাদেরকে এই অসুস্থতা এবং সেলফ-হেল্প (স্ব-সহায়তা) সম্পর্কে কিছু তথ্য দিতে পারেন।
ব্যবহারিক সাহায্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেক কার্যকর। নিশ্চিত করুন যে আপনার আত্মীয় বা বন্ধু ঠিকভাবে নিজের দেখাশোনা করতে সক্ষম, এবং বিল পরিশোধের মতো দৈনন্দিন ব্যবহারিক কাজগুলো করতে যেন ভুলে না যান।
আপনার প্রিয়জনকে ভালো থাকতে সাহায্য করা
মুড এপিসোডগুলোর মধ্যকার বাইপোলার ডিজঅর্ডার সম্পর্কে আরও জানুন। আপনার বন্ধু বা প্রিয়জনের সাথে জিপি বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যে-কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্টে যাওয়া সহায়ক হতে পারে।
স্থানীয় মানসিক সহায়তা পরিষেবা সংস্থা আপনার পরিবারকে বাইপোলার ডিজঅর্ডার বিষয়ে সহায়তা, পারিবারিক বৈঠক এবং তথ্য সরবরাহ করতে পারবে।
নিজে ভালো থাকা
সতেজ হওয়ার জন্য নিজেকে স্থান এবং সময় দিন। নিজের জন্য বা বিশ্বস্ত বন্ধুদের সাথে কাটানোর জন্য কিছু সময় রাখুন যারা আপনার দরকারি সহায়তা দেবেন। আপনার আত্মীয় বা বন্ধুকে হাসপাতালে যেতে হলে তার যাওয়ার বিষয়টি অন্য কারও সাথে শেয়ার করুন। খুব ক্লান্ত না হলে আপনি আপনার বন্ধু বা আত্মীয়কে আরও ভালোভাবে সমর্থন করতে পারেন।
জরুরী অবস্থা মোকাবিলা করা
- গুরুতর ম্যানিয়ায় একজন ব্যক্তি শত্রুভাবাপন্ন, সন্দেহপ্রবণ এবং মৌখিক বা শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক হতে পারেন।
- তীব্র মানসিক অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তি আত্মহত্যার কথা ভাবা শুরু করতে পারেন।
আপনি যদি এমন কাউকে খুঁজে পান যিনি :
- খাবার ও পানি এড়িয়ে চলে নিজের প্রতি চরম অবহেলা করছেন
- এমনভাবে আচরণ করছেন যার কারণে তিনি নিজে বা অন্যেরা ঝুঁকির মধ্যে থাকছেন
- নিজের ক্ষতি বা আত্মহত্যা করার কথা বলছেন
অবিলম্বে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। সংকটকালের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ট্রাস্ট বা ইমার্জেন্সি টিমের একটি ক্রাইসিস নম্বর থাকতে পারে। জরুরী বিভাগে ২৪ ঘন্টা একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ থাকবেন।
এমন একজন বিশ্বস্ত পেশাদার ব্যক্তির নাম ও তাদের টেলিফোন নম্বর রাখুন যাকে আপনি এই ধরনের যে-কোনো জরুরি অবস্থায় ফোন করতে পারবেন। কখনও কখনও হাসপাতালে একটি সংক্ষিপ্ত ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।
আপনার বাইপোলার ডিজঅর্ডার থাকা অবস্থায় বাচ্চাদের দেখাশোনা করা
ম্যানিক বা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লে কিছু সময়ের জন্য আপনি আপনার বাচ্চাদের ঠিকভাবে দেখাশোনা করতে পারবেন না। আপনি অসুস্থ থাকাকালীন আপনার সঙ্গী বা পরিবারের অন্য সদস্যকে এটি করতে হবে। আপনি সুস্থ থাকা অবস্থায় আগে থেকেই এর জন্য পরিকল্পনা করা সহায়ক হতে পারে।
আপনি সুস্থ না থাকলে আপনার সন্তান উদ্বিগ্ন ও বিভ্রান্ত বোধ করতে পারে। কথার মাধ্যমে নিজেদের কষ্ট প্রকাশ করতে না পারলে ছোট শিশুরা কোনোকিছু আঁকড়ে ধরে থাকতে পারে এবং তাদেরকে সামলানো কষ্টকর হতে পারে। বয়স্ক শিশুরা অন্য উপায়ে এটি প্রকাশ করবে।
শিশুদের আশেপাশের প্রাপ্তবয়স্করা সংবেদনশীল ও অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন হলে এবং শান্ত, সহায়ক ও সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তাদের অসুবিধা ও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে তা শিশুদের জন্য সহায়ক হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি তাদেরকে ব্যাখ্যা করতে পারবেন যে কেন তাদের মা/বাবা ভিন্ন আচরণ করছেন। প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে শান্ত ও বাস্তবসম্মতভাবে এবং তারা বুঝতে পারে এমন ভাষায়। স্বাভাবিক দৈনন্দিন রুটিন অনুযায়ী চলতে পারলে তারা আরও ভালো বোধ করবে।
শিশুদেরকে বাইপোলার ডিজঅর্ডারের ব্যাখ্যা করা
বয়স্ক শিশুরা কখনও কখনও এই ভেবে উদ্বিগ্ন হয় যে তাদের কারণে তাদের মা-বাবা অসুস্থ হয়েছেন। তাদেরকে আশ্বস্ত করা দরকার যে এটি তাদের দোষ নয়, তবে তাদেরকে সময় ও সমর্থন দেওয়া উচিত। যখন একজন বয়স্ক শিশুকে অসুস্থ পিতামাতার যত্ন নিতে হয়, তখন তাদের বিশেষ বোধশক্তি এবং ব্যবহারিক সহায়তার প্রয়োজন হবে।
সাপোর্ট গ্রুপ এবং পরিচর্যাকারী সংস্থা
বাইপোলার ইউকে
বাইপোলার ইউকে বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি, তাদের বন্ধু এবং পরিচর্যাকারীদের জন্য সহায়তা, পরামর্শ এবং তথ্য প্রদান করে।
পিয়ার সাপোর্ট লাইন : ০৭৫৯১৩৭৫৫৪৪ (আনসার ফোন এবং কল ব্যাক)
বাইপোলার ফেলোশিপ স্কটল্যান্ড
বাইপোলার ফেলোশিপ স্কটল্যান্ড বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তাদের পরিচর্যাকারীদের জন্য তথ্য, সহায়তা এবং পরামর্শ প্রদান করে। তারা স্কটল্যান্ড জুড়ে সেলফ-হেল্প প্রচার করে এবং অসুস্থতা ও সংস্থা সম্পর্কে অবহিত করে এবং শেখায়।
ফোন : ০১৪১ ৫৬০ ২০৫০
সাইড বাই সাইড - মাইন্ড অনলাইন কমিউনিটি
সাইড বাই সাইড হলো একটি অনলাইন সমর্থন কমিউনিটি। এখানে আপনি ঘরে বসে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে কথা বলতে পারবেন এবং এমন মানুষদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন যারা বোঝেন যে আপনি কীসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন।
মাইন্ড হেল্পলাইন
মাইন্ড-এর কয়েকটি হেল্পলাইনে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
সামারিটানস
যারা উদ্বিগ্ন, বিচলিত কিংবা যাদের আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে, তাদের জন্য সামারিটানস টেলিফোন ও ইমেইলের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা গোপনীয় সহায়তা প্রদান করে।
ফোন : ১১৬ ১২৩
ইমেইল : jo@samaritans.org
আরও পড়তে পারেন
- ফাস্ট এ., প্রেস্টন জে.ডি. বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত কাউকে ভালবাসা : আপনার সঙ্গীকে বোঝা এবং সাহায্য করা। নিউ হারবিঞ্জার পাবলিকেশন; ২০১২।
- গিডেস, জে. (২০০৩) বাইপোলার ডিজঅর্ডার। প্রমাণনির্ভর মানসিক স্বাস্থ্য, ৬ (৪) : ১০১-২।
- গুডউইন, জি.এম. (২০০৯) বাইপোলার ডিজঅর্ডার চিকিৎসার জন্য প্রমাণ-ভিত্তিক নির্দেশিকা : সংশোধিত তৃতীয় সংস্করণ - ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর সাইকোফার্মাকোলজি কর্তৃক সুপারিশকৃত। জার্নাল অব সাইকোফার্মাকোলজি, ৩০(৬); ৪৯৫-৫৫৩।
- কে রেডফিল্ড জেমিসন। একটি অশান্ত মন। আলফ্রেড এ. নফ; ১৯৯৫।
জনসাধারণের জন্য এনআইসিএ-এর তথ্য
- বাইপোলার ডিজঅর্ডারের জন্য এনআইসিই মানদণ্ড
- এনআইসিই সিজি১৮৫ : বাইপোলার ডিজঅর্ডার : প্রাপ্তবয়স্ক, শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বাইপোলার ডিজঅর্ডারের প্রাথমিক ও আনুষঙ্গিক যত্ন মূল্যায়ন এবং ব্যবস্থাপনা (২০১৪)
- মরিস, আর। (২০০৪)। বাইপোলার অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডারের রোগীদের জন্য প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণের চিকিৎসা। মানসিক চিকিৎসায় অগ্রগতি, ১০ : ১৮ - ২৬।
- পারসোউড আর., রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টস। মন : ব্যবহারকারীর জন্য একটি নির্দেশিকা। ব্যান্টাম; ২০০৭।
ক্রেডিট
রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টস পাবলিক এনগেজমেন্ট এডিটোরিয়াল বোর্ড দ্বারা প্রযোজিত
সিরিজ সম্পাদক : ড. ফিল টিমস
সিরিজ ব্যবস্থাপক : থমাস কেনেডি
© আগস্ট ২০২০ রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টস
রয়্যাল কলেজ অফ সাইকিয়াট্রিস্টের অনুমতি ছাড়া এই লিফলেটটি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে পুনরুৎপাদন করা যাবে না।
This translation was produced by CLEAR Global (Aug 2023)